এ এক অদ্ভুত মেলা। সদ্য যৌবনপ্রাপ্ত মেয়ে থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারীরা এই মেলায় অংশ নেন স্রেফ জীবনসঙ্গীকে খুঁজে বের করতে। তবে শর্ত একটাই, বিবাহ ইচ্ছু নারীদের কুমারী হওয়াটা বাধ্যতামূলক।
বুলগেরিয়ার স্তারা জাগোরা নামে এই অঞ্চলের রোমা জনগোষ্ঠীর নারীরা এভাবেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রোমা জনজাতি মূলত তামার বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে থাকে। এটাই এদের রুজি-রুটি। বুলগেরিয়াতে এদের অনেকে কালাইদঝি বলেও ডাকে।
দারিদ্র্য আর অনটন এদের নিত্যসঙ্গী। ফলে, বিবাহের মতো ব্যয়বহুল আনুষ্ঠানের আড়ম্বর এদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই এই মেলাই রোমা জনজাতির কাছে জীবনসঙ্গিনী খুঁজে পাওয়ার একমাত্র জায়গা।
পাত্রীর সাজে মেলায় আসা নারীদের শুধু পছন্দ করলেই হবে না, পুরুষদের এর জন্য খরচ করতে হয় টাকা কড়িও। কারণ, যে পুরুষের যে নারীকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পছন্দ হবে, তার জন্য তাকে যথার্থ দাম দিতে হয়। কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত দর ওঠে মেলায় পাত্রী হিসেবে যোগ দেওয়া নারীদের।
কোনো পাত্রী কেমন দর পাবেন, তা নির্ভর করে তার সৌন্দর্য থেকে শুরু করে সাজপোশাক, আচার ব্যবহারের উপরে। মেলার নিয়ম অনুসারে, মেয়েরা যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন অথবা মেলার জন্য প্রস্তুত মঞ্চেও নিজেদের পাত্রী হিসেবে তুলে ধরতে পারেন। মঞ্চে ওঠা মেয়েদের জন্য নিলামের মতো দরও হাঁকাহাঁকি হয়। আবার পুরুষরা মঞ্চে থাকা নারীদের সঙ্গে সেখানে নাচা-গানাতেও অংশ নিতে পারেন। এরপরই পছন্দের নারীর জন্য দর হাঁকতে পারেন তিনি।
এই মেলায় অংশ নিতে মেয়েদের সাজপোশাকও হতে হয় চটকদার। এখানে নাবালক দম্পতি দণ্ডণীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় না। ফলে, ১৩ বছরের মেয়ের সমবয়সী পুরুষসঙ্গী এখানে একেবারেই বিরল নয়। এমনও দেখা গেছে, বাবা-মায়েরা ছেলে-মেয়েকে অল্প বয়সেই এই মেলার অংশগ্রহণের জন্য নিয়ে এসেছে।
কারণ, বাবা-মায়েদের ধারণা, বেশি দেরি করলে হয়তো ছেলে-মেয়েকে সারা জীবন চিরকুমার বা চিরকুমারী হয়েই কাটাতে হবে। বছরে চার বার এই মেলা বসে। সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় বসন্তের মেলা।